মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক শান্তিপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, যদি ইসরায়েল তাদের আগ্রাসন বন্ধ করে, তবে ইরানও যুদ্ধের পথ থেকে সরে আসবে। ইরান সংঘাত বাড়াতে চায় না এবং এই উত্তেজনা অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ুক সেটাও চায় না তেহরান। এমন মন্তব্য করেন তিনি রোববার (১৫ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে।
আরাঘচি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইরান এই যুদ্ধ শুরু করেনি। আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং যদি ইসরায়েল তাদের আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রতিক্রিয়াও থেমে যাবে। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে আর রক্তপাত চাই না।”
এ সময় তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধ ও সংঘাত ছড়িয়ে পড়া এই অঞ্চলের কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়। আমরা আমাদের জনগণ এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।”
উল্লেখ্য, ১৩ জুন (শুক্রবার) থেকে ইসরায়েল টানা বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায়। ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮০০ জন।
জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রায় ৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। আল জাজিরা জানায়, ইরানের হামলায় হাইফার তেল শোধনাগারে সরাসরি আঘাত হানা হয়েছে। হামলায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরাও অংশ নেয়ার দাবি করেছে।
ইসরায়েলি সরকার জানায়, ইরানের পাল্টা হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের এমন অবস্থান কিছুটা হলেও উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিচ্ছে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হবে কি না, তা নির্ভর করছে উভয় পক্ষের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের উপর। আন্তর্জাতিক মহল ইতোমধ্যে উভয় দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।