কক্সবাজারের টেকনাফে এক বিএনপি নেতার পায়ুপথ থেকে দুই হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আটক ব্যক্তির নাম নুর আহমদ, যিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে টেকনাফ-মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইমামের ডেইল এলাকায় স্থাপিত বিজিবির চেকপোস্টে এই অভিযান পরিচালিত হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করেন এবং সন্দেহভাজন হিসেবে নুর আহমদকে আটক করেন।
বিজিবির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তল্লাশির সময় নুর আহমদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিশেষ পদ্ধতিতে তার শরীর তল্লাশি করা হলে পায়ুপথে লুকানো অবস্থায় দুই হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে নুর আহমদ ইয়াবা বহনের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় বিজিবি।
কক্সবাজার বিজিবি সেক্টরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং তাকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, নুর আহমদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসার অভিযোগ থাকলেও তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। সাধারণ সম্পাদকের পদ ব্যবহার করে সে একটি সংগঠিত মাদক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তার পেছনে নাকি আরও প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের সমর্থন ছিল, যার কারণে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এতদিন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
স্থানীয় জনগণ ও সচেতন মহল এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। নেটিজেনদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—যদি একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতা এইভাবে সীমান্ত এলাকায় মাদক পাচারে জড়িত থাকেন, তাহলে দেশের মাদকবিরোধী লড়াই কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে তা সহজেই অনুমেয়।
তারা বলছেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত, নিজস্ব নেতাকর্মীদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। মাদক সংশ্লিষ্টতার মতো গুরুতর অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের কঠোরভাবে বিচারের আওতায় আনা উচিত—তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন।”
তবে এ বিষয়ে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।